বিএনপির সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়া ও জোট গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। এক টেলিভিশন আলোচনায় তিনি বিএনপির অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি, প্রার্থী বাছাই ও নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
রুমিন ফারহানা জানান, বিএনপি বর্তমানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট গঠন ও আসন ভাগাভাগি নিয়ে সক্রিয় আলোচনায় আছে। গত ১৫ বছর ধরে যারা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দলের পাশে ছিলেন, তাদের সঙ্গেই আসন ভাগাভাগিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। নতুন কিছু দলের সঙ্গেও সমঝোতার আলোচনা চলছে, এবং জোটের স্বার্থে কিছু আসনে ছাড় দেওয়া হতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির এখনো ৬৩টি আসনে মনোনয়ন ঘোষণা বাকি, যেগুলোর বেশিরভাগই জোটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। “আমরা এমন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি, যারা বাস্তবিকভাবে জয়ের সম্ভাবনা রাখেন,” বলেন রুমিন।
নিজের প্রসঙ্গে তিনি জানান, তার মনোনয়ন আপাতত স্থগিত রয়েছে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি।
দলের কিছু কর্মী মনোনয়ন না পেয়ে বিক্ষোভ করায় তিনি বলেন,
“এটি খুব স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এত বড় দলে প্রতিটি আসনে গড়ে তিন-চারজন বা কখনো দশজন পর্যন্ত মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকেন। সবাইকে মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। এই ক্ষোভ বা হতাশা আবেগজনিত, এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না।”
রুমিন আরও জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রার্থীদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন এবং মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেছেন।
তিনি বলেন,
“৩০০ আসনের মধ্যে কেবল ৩০০ জনকেই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব। যারা এবার মনোনয়ন পাননি, ভবিষ্যতে তাদের অন্য দায়িত্ব বা সুযোগ দেওয়া হতে পারে।”
মনোনয়ন না পাওয়া নেতাকর্মীদের আবেগের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন,
“নেতাকর্মীদের ত্যাগ, শ্রম ও ভালোবাসার ফলেই একজন প্রার্থী সামনে আসতে পারেন। তাঁদের মন খারাপ হওয়া স্বাভাবিক, আর এই আবেগকেও সম্মান করা উচিত।”
স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়ানোর প্রবণতা ঠেকানো সম্ভব হবে কিনা— এ প্রশ্নে তিনি বলেন,
“এখনই কিছু বলা কঠিন। কারণ, ৬৩টি আসনের মনোনয়ন এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দলের মহাসচিবও বলেছেন, প্রাথমিক তালিকা পরিবর্তন হতে পারে— নতুন কেউ যুক্ত হতে পারেন, কেউ বাদও পড়তে পারেন।”
শেষে তিনি জানান, কিছু আসনে নির্বাচন কমিশনের রায়ের অপেক্ষায়ও রয়েছে দল।
