Tuesday, November 11, 2025

ইউনুস সরকারকে উৎখাত করতে হাসিনার মামাতো ভাই এন এস আই সদস্যের গোপন পরিকল্পনা ফাঁস

আরও পড়ুন

ইউনুস সরকারকে উৎখাত করতে হাসিনার মামাতো ভাই এন এস আই সদস্যের গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাধর মামাতো ভাই শেখ শাফিনুল হক লাবু জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের যুগ্ম পরিচালক হিসেবে সিলেটে দাপটের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগে ‘র’-এর নেটওয়ার্কে যুক্ত থেকে তিনি কাজ করছেন এবং ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা ও বিভিন্ন বাহিনীর পলাতক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা ও তথ্য আদান-প্রদান করছেন।

সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ৮ আগস্ট তৎকালীন এনএসআই ডিজি মেজর জেনারেল মো. হোসাইন আল মোরশেদ তাকে নিরাপদ কর্মস্থল হিসেবে গোপনে সিলেটে বদলি করেন। সেই থেকে তিনি সিলেট বিভাগের দায়িত্বে আছেন। তাকে আড়াল করে রাখার জন্যই সেফ জোন হিসেবে দ্রুত সেখানে বদলি করা হয় বলে জানা গেছে। শেখ শাফিনুল হক লাবু ২০১২ সালে এনএসআইয়ে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন।

আরও পড়ুনঃ  সুন্দরবনের দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ

নিয়োগ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া সত্ত্বেও শেখ হাসিনার আত্মীয় পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে তার চাকরি হয়। ২০১৯ সালে তাকে উপপরিচালক (ডিডি) এবং ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে ‘বিশেষ কৃতিত্বের’ পুরস্কার হিসেবে যুগ্ম পরিচালক (জেডি) হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। তিনি কলকাতা মিশনে দ্বিতীয় সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, কলকাতা উপদূতাবাসে কর্মরত থাকাকালে তার ‘র’ ঘনিষ্ঠতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এনএসআইয়ের বাছাইকৃত কর্মকর্তাদের ভারতে ‘র’-এর প্রশিক্ষণের মূল সমন্বয় ও তদারকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

এজন্য তিনি বিশেষভাবে পুরস্কৃত হন। কলকাতায় নারীঘটিত একাধিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। তার ব্যাংক হিসাবে ১৩০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শেখ পরিবারের সদস্য এই কর্মকর্তার বিষয়ে এনএসআইয়ে কোনো উচ্চবাচ্য নেই এবং কোনো ধরনের তদন্তের তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। তিনি সম্ভবত বাংলাদেশে অবস্থানরত শেখ পরিবারের একমাত্র সদস্য, যিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরও বহালতবিয়তে ও দাপটের সঙ্গে এনএসআইয়ের মতো রাষ্ট্রীয় স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই কর্মকর্তার কাছে মহাপরিচালকসহ সরকারের অনেক দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা অনেকটা অসহায় ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই সময় তিনি এনএসআইয়ের অঘোষিত সম্রাট ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে বেশিরভাগ সময় তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রটেকশন টিমে দায়িত্ব পালন করতেন। পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীতে নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভারতে কর্মরত থাকাকালে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় দিবসগুলো উদযাপনে ব্যাপক তৎপর থাকতেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুনঃ  ডেলিভারি অ্যাপকে ফাঁকি দিয়ে ২ বছরে ২৯ লাখ টাকার খাবার খেলেন যুবক !

ওই সব অনুষ্ঠানে তিনি প্রটোকল ভেঙে ‘র’-এর সদস্যসহ অনেককে আমন্ত্রণ জানাতেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অসুস্থ হওয়ার পর তার চিকিৎসার জন্য ভারতের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠিকে বাংলাদেশে আনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন লাবু। সরকারি কর্মকর্তা হলেও তিনি নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন বলে জানা গেছে। তাকে টুঙ্গিপাড়া ও ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ  ফেটে যাওয়া ঠোঁট যেসব টোটকায় হবে নরম ও মসৃণ

তিনি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার রামপুরায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও রামপুরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ লিয়াকত আলী, তার বোন ও ঢাকা মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মলি এবং তার বড় ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শেখ অলিদুর রহমান হীরা উপস্থিত ছিলেন। লাবুর বড় ভাই শেখ অলিদুর রহমান হীরাকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

হীরা বাংলাদেশের স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের অন্যতম হোতা। বিমানবন্দর দিয়ে বড় বড় স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। র‌্যাব তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। শেখ শাফিনুল হক লাবু এবং শেখ অলিদুর রহমান হীরার বাবা শেখ আকরাম হোসেন শেখ হাসিনার মা ফজিলাতুন্নেছার আপন চাচাতো ভাই।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ