সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, কয়েক দিন আগে সিনিয়র সাংবাদিক মাহবুব কামাল কালের কণ্ঠ মাল্টিমিডিয়ার এক টক শোতে অংশ নেন। সেখানে বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। মাহবুব কামাল সেখানে বলেন, নির্বাচনের আগে ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট-২’ চালানো হবে। তার এই কথার সঙ্গে আমি নিজেও একমত পোষণ করছি।
বুধবার (৫ নভেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সাংবাদিক মাহবুব কামালের বক্তব্য নিয়ে গোলাম মাওলা রনি কথা বলেছেন এবং তিনি নিজেও মাহবুব কামালের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েছেন।
রনি জানান, ওই অনুষ্ঠানে মাহবুব কামাল বলেছেন, দ্রুত অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তৎপর হবে। এটি আগের ‘ক্লিন হার্ট’ অপারেশনের মতো একটি সুগঠিত অভিযান হবে। বিএনপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল, মাস্তানি ইত্যাদি অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে আছে—সেগুলোর বিস্তৃত তালিকা তারা তৈরি করেছে।
পরিপূর্ণ তালিকাটি দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে তৈরি রয়েছে।
মাহবুব কামাল আরো বলেন, গত ১৪ মাস ধরে আমরা দেখেছি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অনেক ক্ষেত্রে ডিউটি পালন করছে না; অনেক ক্ষেত্রে তাদের দেখলে ভুয়া ভুয়া বলা হচ্ছে, তারা মুচকি হাসছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা দৌড়ে গাড়িতে উঠছে। এটা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর আসল চরিত্র নয়।
মাহবুব কামাল আরো অভিযোগ করেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যে কাজটি করছে একটা উদ্দেশ্য নিয়ে তারা মাঠটা ফাঁকা করে দিয়েছে যেন বিএনপির যারা নেতাকর্মী তারা ফাঁদে পড়ে এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা সেই ফাঁদে পড়ে গেছে। এখন এই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে যদি অপারেশন চালায় তাহলে বিএনপির অস্তিত্ব থাকবে না। এই কাজটি করা হবে ম্যাটিকুলাস ডিজাইন অনুযায়ী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে সেই ম্যাটিকুলাস ডিজাইনের অংশ হিসেবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই।
মাহবুব কামালের বক্তব্যে প্রসঙ্গে গোলাম মাওলা রনি জানান, তিনি নিজেও ১৪ মাস থেকেই নানা রকম আশঙ্কা করছেন।
তার কাছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর এই পরিস্থিতি বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এই ১৪ মাসে সব কিছু খুব সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পনা করেছে। ধরার জন্য ফাঁদ বোনা, চেপে ধরার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া, শাস্তি দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া— সব কিছু ম্যাটিকুলাসলি ফিট করা হয়েছে। ফলে এখন কবে গলা টিপা হবে, কবে রিসেট বাটনে চাপ দেওয়া হবে, কবে ঝাঁপিয়ে পড়া হবে—সবই নির্ধারিত। বঙ্গবন্ধুর সময়েও একই রকম অপারেশন চালিয়ে রক্ষী বাহিনী রাজনৈতিক শক্তিকে ভেঙে দিয়েছিল; ফলত ওই সময় আওয়ামী লীগও টিকে থাকতে পারেনি।
রনি বলেন, সাময়িকভাবে যে রাজনৈতিক দলগুলো—বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি এবং অন্যান্যরা—এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অর্থ, সুযোগ ও ক্ষমতা পেয়ে ভারসাম্যহীন ও দিশাহীন হয়ে পড়েছে, তাদের ওপর তৈরীকৃত ফাঁদ কার্যকর হয়েছে। এখন যারা ওই ফাঁদে আটকা পড়েছেন তারা (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী) কখন সুতায় টান দেবেন তা তাদের ওপর নির্ভর করে কিন্তু এটি অনিবার্যভাবে ঘটবে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মাহবুব কামালের কথাই আমি পুনর্ব্যক্ত করছি।
